ক্রাইম সিরিজ১/দংশন

সঞ্জয় গুপ্ত

সাপের কামড়ে ভারতে প্রতি বছর প্রায় ৪৫০০০ হাজারের কাছাকাছি লোক মারা যায় । ২০২০ সালের ৭ মে কেরলের কোল্লামের একটি গ্রামে উষ্রা নামে এক গৃহবধূ মৃতদের সেই তালিকায় জায়গা পেয়ে গেল।

ঘুমের মধ্যেই ছোবল

স্বামীর সঙ্গে উষ্রা এসেছিল নিজের বাবার বাড়িতে। খুব ভোরে, ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় তাকে কেউটে সাপে ছোবল দেয়। খুব সকালে উঠে তার স্বামী ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছে প্রাতঃভ্রমণে। সেই সময়েই অঘটন। স্বামী ফিরে এসে আবিষ্কার করে স্ত্রী-র মৃতদেহ। তারপর ঘরে খোঁজাখুঁজি করতে করতে আলমারির এক কোনায় লুকিয়ে থাকা সাপটিকে খুঁজে পাওয়া যায়। সেটিকে বার করে এনে মেরে ফেলা হয়। অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে পোস্টমর্টেম হবেই। হয়েও গিয়েছে।

সন্দেহের তির স্বামীর দিকে

এরই মধ্যে ওই গৃহবধূর মৃত্যুর ঠিক এক সপ্তাহ পরে একজন মাঝবয়সি ভদ্রলোক দেখা করতে এলেন কোল্লাম গ্রামীণ এলাকার পুলিশ সুপার এস হরিশঙ্করের সঙ্গে। তিনি চাইছেন, পুলিশ তদন্ত করে দেখুক, তার মেয়ে উষ্রার মৃত্যুর পিছনে স্বামী সুরজ এস কুমারের কোন হাত রয়েছে কি না? পোস্ট মর্টেম রিপোর্টে অবশ্য সন্দেহ করার মতো কিছু ছিল না। ওই যুবতীর মৃত্যু সত্যিই কেউটে সাপের বিষেই হয়েছে।

কিন্তু যে বিষয়টা হরিশঙ্করের কাছে খুব আশ্চর্যের মনে হচ্ছিল, তা হচ্ছে, এই ঘটনার মাস দুয়েক আগেও উষ্রাকে সাপে ছোবল দিয়েছিল। উষ্রা যখন শ্বশুরবাড়িতে ছিল, সেই সময় ব্যাপারটা ঘটে। সেই বার অবশ্য অসুস্থ হয়ে ও সেরে উঠেছিল সে। সে বার উষ্রাকে কামড়েছিল রাসেল ভাইপার বলে একধরনের সাপ। এরই সঙ্গে আর একটা খবরও পাওয়া গেল। সুরজ এস কুমার বেশ বড় করে “সর্প পূজা” র আয়োজন করেছে। ব্যাপারটা ঘোরালো মনে হতেই সর্পদংশনের ব্যাপারটা খতিয়ে দেখতে তদন্তকারীরা পৌঁছে গেলেন সুরজদের বাড়িতে।

শুরু হল তদন্ত

প্রথমবার উষ্রাকে সাপে কেটেছিল তাঁর শ্বশুর বাড়িতে, দোতলার ঘরে। যে সাপটি কেটেছিল, সেটি রাসেল ভাইপার গোত্রীয়। পুলিশ সাপ সম্পর্কে অভিজ্ঞ লোকেদের মতামত নিতে গিয়ে জানলো, এই প্রজাতির সাপ সাধারণত গাছে চড়তে চায় না। কৃষিজমি, কিংবা সব্জি চাষের ক্ষেতে থাকতে পছন্দ করে। সাধারণ ভাবে ছোবল, শিকার কিংবা শত্রুকে মারে মাটিতে থাকা অবস্থায়। তাহলে সাপটি দোতলায় গেল কী ভাবে?

সুরজের মা তদন্তকারীদের দেখিয়েছিলেন বাড়ির পাশের একটি গাছের ডাল। সেটা ঝুলে রয়েছে দোতলার ঘরটির গা ঘেঁসে। তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই ডালটি কাটার কথা বলেছেন, কিন্তু কেউই তাঁর কথা শোনেনি। এই ডালটি দিয়েই নাকি সাপ নেমে এসেছিল ঘরের ভিতরে। প্রতিবেশীরা অবশ্য অন্য কথা বলছে। তাঁদেরই একজন জানালেন, গাছের ওই ডালটি নাকি সুরজদের বাড়ির লোকেরাই টেনে টেনে এনেছে দোতলার জানলার কাছে। ব্যাপার যা-ই হোক, ওই সাপের কামড়ে তো কিছু হয়নি। কিন্তু কেউটে সাপটি উষ্রার বাড়িতে এল কী ভাবে?

কী বললেন বিশেষজ্ঞরা

দরজা ছাড়া সেই ঘরে ছিল দু’টো জানলা আর তিনটে ভেন্টিলেটর। ভেন্টিলেটর তো অনেক উঁচুতে। মাটি থেকে জানলা গুলির উচ্চতা ১৫০ সেন্টিমিটার। বিশেষজ্ঞরা জানালেন, একটি কেউটে সাপ , নিজের দৈর্ঘ্যের তিন ভাগের এক ভাগ অবধি উচুঁ হতে পারে। যে সাপটি উষ্রাকে ছোবল দিয়ে মৃত্যু ঘটিয়েছিল, তার দৈর্ঘ্য ছিল ১৫০ সেন্টিমিটার। তাহলে মাটি থেকে যে কোনও কারণেই সাপটি উচু হতে পারে ৫০ সেন্টিমিটার অবধি। আরও কিছু ব্যাপার তদন্তকারীদের ভ্রু কুঁচকে দিয়েছিল। কেউটে সাধারণত শিকার করতে বের হয় রাত ছয়টা থেকে আটটার মধ্যে। তারপর অনেকক্ষণ ধরে তার বিশ্রাম করার পর্ব।

কেউটের আরও একটা ব্যাপার হচ্ছে, বিরক্তির উদ্রেক না হলে সে ছোবল দেয় না। কেউটে সাধারণত তিন ভাবে ছোবল অস্ত্রটি ব্যবহার করে। সামনে আসা বিপজ্জনক কিছু দেখলে ভয় দেখাতে, নাহলে অল্প বিষ ছোবলের মাধ্যমে দিয়ে কিংবা খুব বিরক্ত হলে বা ভয় পেলে নিজের সব বিষ একসঙ্গে ঢেলে দিয়ে। যেহেতু বিষ একবার শেষ হয়ে গেলে ভরতে বেশ সময় লাগে, তাই বিষের ব্যাবহার সে সাবধানে করতে চায়। উষ্রাকে সাপটি দু’বার ছোবল মেরেছিল। প্রথমবার দোতলায় উঠে গিয়ে ছোবল মেরেছে সাপ, দ্বিতীয় বার ঘুমন্ত মেয়েটিকে দু’বার ছোবল … ব্যাপারটা সত্যিই গন্ডগোলের।

ষড়যন্ত্রের জাল

সুরজ কিন্তু কিছুই স্বীকার করতে চাইছে না। সুরজকে নিয়ে আগেও দু-চারবার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল। সে বন্য জন্তু নিয়ে যথেষ্ট উৎসাহী। ছাগল, খরগোশ ,কুকুর সব রয়েছে বাড়িতে। কিন্তু পাড়ায় খোঁজখবর করে জানা গেল, উষ্রাকে সাপে প্রথমবার কামড় দেওয়ার প্রায় মাস ছয়েক আগে, সুরজ একটা সাপ নিয়ে এসেছিল বাড়িতে। সেটা নিয়ে সে বাড়ির লোকেদের সামনে ছেড়ে, আবার ধরে দেখাত। খুঁজতে খুঁজতে পুলিশ সুরেশ নামে একজন সাপুড়ের সন্ধান পেল, যে স্বীকার করে নিল— সে-ই সাপটি সুরজকে দিয়েছিল এবং পরে তার থেকে ফেরতও নিয়ে নিয়েছিল।

দু’জনকেই জেরা করে জানা গেল, তারা নাকি মাত্র দু’বার দেখা করেছে। কিন্তু মোবাইল ফোনের রেকর্ড বলছে, অনেকবারই কথা হয়েছে ওদের। আবার দেখা হওয়ার সময় অনুযায়ী বোঝা যাচ্ছিল, ওদের সাক্ষাৎ হয়েছে উষ্রাকে সাপে কামড় দেওয়ার দু-একদিন আগে। হেফাজতে নেওয়ার পর পুরো পাঁচদিন সুরজ কোন কিছুই স্বীকার করেনি। পরে সে মেনে নিল, সাপ এনেছিল বটে কিন্তু সেটা নিতান্তই শখে। ফেরতও দিয়ে দিয়েছে। তার বাড়িতে ভাইপার গোত্রীয় সাপটি উষ্রাকে ছোবল দিয়েছিল বাথরুমে। সে তখন বাড়িতে ছিল না।

মোবাইলই বড় শত্রু

সুরজের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে দাঁড়ালো তার ফোনটি। দেখা গেল, গুগলে সে প্রচুর অনুসন্ধান চালিয়েছে সাপ নিয়ে। ভাইপার সাপটি ছোবল দেওয়ার আগে, সুরজ প্রচুর তথ্য দেখেছে এই সম্পর্কে। কিন্তু সাপে কামড় দেওয়ার পর স্ত্রী সুস্থ হতেই সে তথ্য সংগ্রহ করতে শুরু করেছে কোবরা নিয়ে। কেউটে সাপের ছোবলের কার্যকারিতা সম্পর্কে। কেন সে এসব নিয়ে খোঁজ করছিলো তার কোন যুক্তিসঙ্গত উত্তর সুরজ তদন্তকারীদের দিতে পারেনি।

সাধারণত সাপ কিছু খেলে তার অবশিষ্টাংশ পেটে বেশ কিছুদিন থেকে যায়। কেউটে সাপটির পোস্টমর্টেম করে দেখা গেল, পেটের ভিতরে কিছুই নেই। অর্থাৎ, সাপটিকে কেউ নিশ্চয়ই কোথাও আটকে রেখেছিল। খেতে দেয়নি। কিছুটা খোঁজ করতে সেই পাত্রটিও পাওয়া গেল, যেখানে সাপটিকে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। সেই পাত্রটি পরীক্ষা করে সেই সম্পর্কে যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেল।

সাপুড়ের স্বীকারোক্তি ও তদন্ত

সাপুড়ে সুরেশ শেষমেষ পুলিশি জেরায় স্বীকার করে নিল, কেউটে সাপটিও সে-ই সুরজকে দিয়েছিল। এই মর্মে সাক্ষী দিতেও সে রাজি হয়ে গেল সে। এই মামলার তদন্তে বারবারই বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছিল। সাধারণত যদি ১৮০ সেন্টিমিটার লম্বা কোনও কেউটে সাপ ছোবল দেয়, তাহলে সাপের দাঁতের করা ক্ষত হবে দুই সেন্টিমিটার দূরে। যে সাপটি উষ্রাকে ছোবল দিয়েছিল সেটি ছিল ১৫০ সেন্টিমিটার লম্বা।

কিন্তু দাঁতের ক্ষত সৃষ্টি হয়েছিল ২.৫ থেকে ২.৮ সেন্টিমিটার তফাতে। এটা অদ্ভুত রকমের ব্যাপার। এই ব্যাপারটি পরীক্ষা করে দেখার জন্য সত্যিকারের সাপ নিয়ে এসে, ভিডিও তোলা হল। সাপের কামড়ে কত দূর কী ক্ষত হতে পারে— তার বৈজ্ঞানিক সাক্ষ্য আদালতে পেশ করার জন্য ভাষ্য-সহ রেকর্ডিং করা হল।

সাপের কামড়ে অতদূর অবধি ক্ষত তখনই হতে পারে, যদি কেউ সাপের মাথা ধরে তাকে কোন নির্দিষ্ট বস্তুর দিকে ঠেলে দেয়। তাহলে কোবরার মাথা বৃদ্ধি পায়। পেলে সাপের দাঁতের ক্ষত সৃষ্টি করার জায়গা বেড়ে যাবে। কিন্তু সাপের কামড় তো খুবই যন্ত্রণা দেয়। তাহলে উষ্রা টের পেলো না কেন? পালানোর চেষ্টা করলো না কেন? অন্তত যন্ত্রণায় উঠে চেঁচিয়ে উঠলে, তাঁকে তো কিছুটা হলেও চিকিৎসা করানোর সুযোগ দেওয়া যেত?

খুনের আসল ঘটনা

আসলে উষ্রা সাপে কামড়ানোর ব্যাপারটা টেরই পায়নি। তাঁর অজান্তেই তাঁকে কড়া মাত্রায় ঘুমের ওষুধ দিয়ে সংজ্ঞাহীন করে রেখেছিল সুরজ। তাঁর পাকস্থলীর ভিসেরা পরীক্ষায় পাওয়া গিয়েছিল Cetirizine ওষুধের অবশিষ্টাংশ। এর পর পুলিশের সামনে স্বীকারোক্তি করে ফেলাটাই স্বাভাবিক। সুরজ স্বীকার করে নিয়েছিল, খুব ভোরে কোবরার মাথা শক্ত করে ধরে, সে তার স্ত্রীর গায়ে ঠেসে ধরেছিল ।

সাপটি ছোবল দেওয়ার পর তাঁকে ছেড়ে দিয়ে সে বাইরে বেরিয়ে যায়। সেই জবানবন্দির ফলে টুকরো টুকরো সুতোগুলো গাঁথতে সুবিধা হয়েছিল পুলিশের। কিন্তু এই মামলায় পুলিশের সবচেয়ে বেশি ভয় ছিল যে সব প্রমাণই পারিপার্শ্বিক। সুরজের মা, বাবা ও বোনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল অপরাধীকে সাহায্য করার জন্য।

আদালতে চলল বিচার

কোর্টে পুলিশ জানিয়েছে সুরজের অদ্ভুত ব্যবহারের কথা। এমনিতে সুরজ রোজ দেরি করে ওঠে। কিন্তু সেদিন সে খুব তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে বাইরে যায়। উষ্রার মা মানিমেগালাই, মেয়ের কথা জিজ্ঞেস করলে সুরজ বলে, উষ্রা ঘুমোচ্ছে।

কিছুক্ষণ পরে, মা মেয়ের ঘরে গিয়ে দেখেন, উষ্রা অজ্ঞান, মুখ খোলা অবস্থায় বিছানায় পড়ে রয়েছে। বিচার চলাকালীন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একসময় সুরজ স্বীকার করে নিয়েছিল সে-ই তার স্ত্রীকে খুন করেছে। সাপ দু’টো কেনার জন্য সে দশ হাজার টাকা সাপুড়েকে দিয়েছিল।

২০২১ সালের ১৩ অক্টোবর, কোল্লাম জেলার অতিরিক্ত সেশন জজ মনোজ এম, বিচারের রায় শোনানোর আগে অপরাধীর কাছে জানতে চাইলেন, কিছু বলার আছে? ‘আমার বুড়ো বাবা মা আর একটি অবিবাহিত বোন আছে।’ এর বেশি সে আর কিছু বলেনি। সুরজকে দোষী সাব্যস্ত করে, তাকে সতেরো বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে দু’টি পরপর চলতে থাকা ‘উমর কয়েদের’ সাজা। সঙ্গে পাঁচ লাখ টাকার আর্থিক সাজা।

রায় বেরনোর পর , উষ্রার পরিবার বলেছে, তারা হাইকোর্টে আপিল করবে যাতে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হয়। ওদিকে আসামি পক্ষ সাজা লাঘবের জন্য আর্জি জানাবে বলে ঠিক করেছে। এই মামলার তদন্ত করার যে পদ্ধতি নিয়েছিলেন অফিসাররা, সেটা আজকাল বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশদের ট্রেনিং ম্যানুয়ালে নেওয়া হয়েছে। পারিপার্শ্বিক প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত যে ভাবে সাজা দিয়েছে, সেটাও খুব বড় কথা।

অনেক সময়ই দেখা যায়, উচ্চ আদালতে নিম্ন আদালতের আদেশ রদ হয়ে যায়। প্রচুর খুঁত বের হয়। অপরাধীর সাজা কমে। আসলে এর পিছনের কারণ হচ্ছে, একটি নিয়ম। হাজার দোষী ছাড়া পেয়ে যাক, কিন্তু নির্দোষ যেন শাস্তি না পায়। এই ব্যাপারটির দৌলতে অনেক দোষী ছাড়া পেয়ে যায়। অন্তত ক্রিমিনাল কেসে।

এমন ঘটনা অন্যত্রও

আদালতের কথা থাক। এই তদন্ত কাহিনীর গল্পটি একটু বিশদে বলার পিছনের কারণটি বলি। সাপের সাহায্যে মানুষ মারার ঘটনা বেশ কয়েকটা ঘটেছে, ঘটছে।হয়তো জেনেছেন এই সাম্প্রতিক ঘটনাটি। একটি লোককে, তার স্ত্রী এবং চার বছরের মেয়েকে সাপের ছোবল দিয়ে মেরে ফেলার জন্য গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেও সাপুড়ের কাছ থেকে সাপ কিনে এনেছিল।

ওড়িশায় সাপের কামড়ে কেউ মারা গেলে চার লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায়। সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ সম্প্রতি কৃষ্ণকুমার নামে এক অভিযুক্তের জামিনের আবেদন খারিজ করতে গিয়ে বলেছে, সাপ দিয়ে মানুষ মারার এই ব্যাপারটি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঘটনাটি ২০১৯ সালের। স্বামী সেপাই হিসেবে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে। তাঁর স্ত্রী আল্পনা, মণীশ নামে একজনের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পরে। শাশুড়ি সুবোধ দেবী আর সে-ই শুধু থাকতো রাজস্থানের ঝুনঝুনু এলাকার একটি গ্রামে।

অভিযোগ, শাশুড়ি সব জেনে ফেলায় মণীশ তার বন্ধু কৃষ্ণকুমারকে সঙ্গে গিয়ে দশ হাজার টাকা দিয়ে এক সাপুড়ের থেকে একটি সাপ কিনে আনে। সেই সাপের কামড়ে শাশুড়ি ২০১৯ সালের দুই জুন মারা যান। মাস দেড়েক পর, পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হয়। পুলিশ তদন্ত করতে নেমে দেখে, ওই দুই জুন মণীশ আর আল্পনার মধ্যে ১২৪ বার ফোন কলের আদানপ্রদান হয়েছিল, ১৯ টি কল হয়েছিল আল্পনা আর কৃষ্ণকুমারের মধ্যে। কিছু মেসেজের আদানপ্রদানও হয়েছিল এদের মধ্যে। তারই সূত্র ধরে সাপুড়ের খোঁজ, স্বীকারোক্তি।

এই ধরনের অসংখ্য ঘটনা হয়তো ঘটছে। কিছু খবরে আসে, কিছু আসে না। সাপের কামড়ে চেনাশোনা কেউ মারা গিয়েছে জানলে… Take the news with little bit of apprehension। হয়তো, ব্যাপারটি ঠিক তত সহজ নয়, যতটা দেখাচ্ছে।

অলংকরণ – রাতুল চন্দরায়