মনে করুন সোম-মঙ্গল-বুধ ফাটিয়ে আফিসের কাজ করলেন। বৃহস্পতিবারে নিশ্চিন্ত। অফিসের কাজ করার ব্যাপার নেই। ওই দিনটা আপনার ছুটি। পরিবার কিংবা বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে জমিয়ে আড্ডা। কিংবা অনেকদিন ধরে বাড়ির যে কাজটা আটকে ছিল, নিত্যদিন শুনতে হচ্ছিল গালমন্দ, সেটি সেরে ফেললেন সেই বৃহস্পতিবারেই। উইড-এন্ডে (Weekend)র সন্ধ্যায় হতে পারে অনেক কিছুই…।
করোনার ধাক্কায় দুনিয়া যে ভাবে মোড় নিয়েছে, তাতে আপনার কাজের জগতে (Work Culture) এমন বদল চলে আসতেই পারে। অর্থাৎ, সাতদিনে নয়, আপনার জন্য সপ্তাহ গোনা হবে চারদিনে! তিনদিন কাজের পরে একদিন ছুটি! দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে এখন এ নিয়েই চলছে এক্সপেরিমেন্ট। কোভিড ঝড়ের মধ্যে পরীক্ষামূলক ভাবে চালু হয়েছে এই ফর্মুলা। স্পেন, বেলজিয়াম, সুইডেন, আইসল্যান্ডের মতো দেশগুলিতে সরকারি ও বিভিন্ন বেসরকারী ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে যা কার্যকর হয়েছে।
বলা হচ্ছে, একটানা কাজের একঘেয়েমি থেকে মুক্তি দিতেই নাকি এই নতুন ব্যবস্থা। সাতদিনের বদলে চারদিনে সপ্তাহ। তবে সবটাই করা হচ্ছে কর্মীদের বেতনে হাত না দিয়ে। এই উদ্যোগ প্রথম শুরু হয়েছিল আয়ারল্যান্ডে। তারপর ধীরে ধীরে ইউরোপের দেশগুলিতে তা ছড়িয়ে পড়েছে। স্পেন শুরু করেছে ৩২ ঘণ্টার কাজের সপ্তাহ। যোগ দিয়েছে স্কটল্যান্ড। দুই বছর আগে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন কাজের সময়ের ক্ষেত্রে নমনীয়তা আনার কথা বলেছিলেন। আবার এশিয়া মহাদেশে জাপানের অনেকগুলি কোম্পানিও চালু করেছে চারদিনের সপ্তাহ। ইঙ্গিত মিলছে, আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়াতেও চারদিনে সপ্তাহ করার চেষ্টা হচ্ছে। ফলে ব্যাপারটা অন্য অনেক দেশেই ছড়িয়ে পড়ার সম্ভবনা রয়েছে।
তিন দিন পর কর্মীদের ছুটি মিললেও টার্গেট কিন্তু এতটুকুও কমানো হচ্ছে না। ফলে কাজের দিনগুলিতে অতিরিক্ত সময় দিতে হচ্ছে কর্মীদের।
চারদিনে সপ্তাহ সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়াও মিলছে। নতুন ব্যবস্থায় কর্মীরা পরিবারকে সময় দেবার পর্যাপ্ত সুযোগ পাচ্ছেন। তিনদিন কাজের পরে একদিন পুরো বিশ্রাম। পরিবহন খরচ কমে যাচ্ছে। অন্যদিকে তাঁদের কাজের টার্গেট যেহেতু কমছে না, তাই কাজের দিনে অতিরিক্ত চাপ নিতে হচ্ছে। হয়তো আট ঘণ্টা কাজের পরিবর্তে কোথাও ১০ ঘণ্টা দিতে হচ্ছে। ফলে দিনের শেষে একজন কর্মীকে সেই একঘেয়েমি চেপে বসছে।
এখন দেখার বিষয়, সাত নাকি চার— কতদিনের সপ্তাহ বেশি গ্রহণযোগ্য হয়।