ভারতে প্রথম মেট্রোরেল চালু হয়েছিল কলকাতাতে। সেটা ১৯৮৪ সাল। তারপর থেকে এত বছর ধরে মহানগর ও শহরতলির বিভিন্ন রুটে মেট্রো পরিষেবা যাত্রীদের সুবিধাই শুধু করেনি, ভবিষ্যতের কলকাতা কেমন হতে পারে, তা নিয়ে কল্পনারও জন্ম দিয়েছে। এই পরিষেবার সঙ্গেই এখন ধাপে ধাপে যুক্ত হচ্ছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো পরিষেবা।

এরই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের জন্য একটি নতুন খবর। দুনিয়ার সবচেয়ে আধুনিক রেল পরিষেবা, বুলেট ট্রেনের মানচিত্রেও  বাংলাকে জোড়ার একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব রাজ্যসভায় বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, রেল মন্ত্রক ভারতে সাতটি উচ্চ গতির রেল করিডর বানানোর জন্য বিশদ প্রকল্প প্রতিবেদন (ডিপিআর) প্রস্তুত করছে। তাতেই জুড়ছে বাংলা। বুলেট ট্রেন চালাতে যে সাতটি লাইনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার, সেগুলি হল, দিল্লি-বারাণসী, দিল্লি-অমৃতসর, দিল্লি-আমেদাবাদ, মুম্বাই-নাগপুর, মুম্বাই-হায়দরাবাদ, চেন্নাই-বেঙ্গালুরু-মাইসুরু এবং বারাণসী-হাওড়া। অর্থাৎ, গতির ডানায় পশ্চিমবঙ্গকে জোড়ার ভাবনা তৈরি হয়েছে।

এই মুহূর্তে ঘণ্টায় ৩২০কিমি পর্যন্ত গতি বুলেট ট্রেনের। জাপানই প্রথম চালু করেছিল দ্রুততম এই ট্রেন। ১৯৬৪ সালে জাপানে চালু হওয়ার পর ইউরোপ, চিনে বুলেট ট্রেনের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। প্রায় ২.২৮ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করে ভারতও এখন বুলেট ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা করেছে। ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে মুম্বই ও আমেদাবাদের মধ্যে উচ্চগতিসম্পন্ন এই ট্রেন চালানোর। ভারত সরকারও জানিয়ে দিয়েছে, দেশের পরিকাঠামো প্রকল্পগুলির গুরুত্বের তালিকায় একেবারে উপরের দিকে রাখা হয়েছে বুলেট ট্রেন চালুর এই উদ্যোগকে। মুম্বই-আমেদাবাদ বুলেট ট্রেন প্রকল্পকে গড়ে তুলছে ন্যাশনাল হাইস্পিড রেল কর্পোরেশন লিমিটেড। ৫০৮ কিলোমিটার হাইস্পিড করিডর তৈরির জন্য খরচ হবে প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার কোটি টাকা। এখানে বলা প্রয়োজন, ভারতীয় রেল একটি জাতীয় রেল পরিকল্পনা (National Railway Project-2030) তৈরি করেছে৷ এটি হল, ২০৩০ সালের মধ্যে ভবিষ্যতের রেল পরিকাঠামো ব্যবস্থার পরিকল্পনা করা। লক্ষ্য, রেলের অপারেশনাল ক্ষমতা বাড়ানো এবং আরও বেশি বাণিজ্যিক করে তোলা, যাতে মুনাফা বাড়ানো যায়। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় পশ্চিমবঙ্গে বুলেট ট্রেনের স্বপ্ন জুড়ে গেলে বাংলার ছবিটা যে বদলে যাবে, সন্দেহ নেই।