অনেকক্ষণ রোগী দেখে ডাক্তারবাবু বেশ ক্লান্ত। দু-তিন জায়গায় খেপ খাটতে হয়েছে তাঁকে। মন যখন বিশ্রাম চাইছে তখনই বিস্ময়! দরজা দিয়ে ঢুকছেন তিনি, সুন্দরী এক রোগিনী। দেখেই মন ভাল হয়ে গেল, নড়েচড়ে বসলেন। সুন্দরী দেখলেই পুরুষেরা আত্নসচেতন হয়ে ওঠে। যত্ন নিয়ে দেখা শেষ করে প্রেসক্রিপশন লিখতে যাবেন— সুন্দরী আদুরে গলায় বললেন, স্কিন ঠিক রাখতে কী খাওয়া উচিত ডাক্তারবাবু?
ডাক্তারবাবু এই সুযোগ ছাড়লেন না, প্রথম বলেই ওভারবাউন্ডারি— আপনার যা ত্বক, কিছুই দরকার নেই! সুন্দরীর চোখে আলো, ডাক্তারবাবুর হাতে ব্যাট। সপ্তাহে একটা করে টমোটে খাবেন। এতে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে। আর আছে লাইকোপিন। যা এক ধরনের ক্যারটিনয়েড। রঙিন শাক-সবজিতে থাকা ক্যারটিনয়েড ত্বক ভাল রাখতে সাহায়্য করে। এছাড়া, টমেটো ট্রাই-গ্লিসারাইড ও খারাপ কোলেস্টেরল কমায়।
মহিলা ইমপ্রেসড। টমেটোর এক গুণ! কী ভাবে খাব! বেশি খেলে ক্ষতি আছে?
ডাক্তারবাবু- রান্না না করে বা রান্না করে। তবে স্যালাডে খেলে বেশি ভাল। সপ্তাহে ১০০ থেকে ১২৫ গ্রাম খেলেই চলবে। ত্বকে মাখতেও পারেন। তবে টমেটো যে ভাবে রাসায়নিকে পাকানো হয়, তাতে ক্ষতি হতে পারে। বেশি খেলে আবার ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গিয়ে হাড়ের জয়েন্টে যন্ত্রণা হতে পারে। এজন্য স্থানীয় টমেটো কেনাই ভাল।
মহিলা- অসংখ্য ধন্যবাদ ডাক্তারবাব। যদি আরও কিছু বলতেন…।
ডাক্তারবাবু-(ঘড়িটা দেখে নিয়ে) কুমড়োও খেতে পারেন। এতে বিটা ক্যারোটিন রয়েছে, যা থেকে শরীর ভিটামিন-এ তৈরি করে। আবার ভিটামিন-এ অ্যান্টিবডি তৈরিতে সাহায্য করে।
মহিলা- অ্যান্টিবডি! করোনার সময়ে অ্যান্টিবডি নিয়ে তো সব সময়েই আলোচনা হচ্ছে। তাহলে তো খেতেই হবে। এতদিন কুমড়োকে পাত্তা দিতাম না।
টমেটো-কুমড়োর মতো অনেক শাকসবজির গুণাগুণ শুনে রোগিনী বিদায় নিলেন। যেতে যেতে ভাবছিলেন সেই সব কথা। যা কিছুকে এতদিন ধর্তব্যের মধ্যেই আনেননি, এবার কি খেতে হবে সে সব কিছুই!
ডাক্তারবাবু তাঁকে জানিয়েছেন, সপ্তাহে অন্তত একদিন মাশরুম খেতে হবে। এতে নাকি রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। নিয়মিত খেলে ক্যান্সারের সম্ভাবনা নাকি কমে যায় ৩৪ শতাংশ। মাশরুমের এত গুণ! আবার ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারও এবার থেকে খেতে হবে তাঁকে। শরীরের পক্ষে এসব খুবই প্রয়োজনীয়। তাই ডাল-কলা-শশা-বাদাম-ওটস। ছাড়লে চলবে না।
ডাক্তারবাবুর চেম্বার থেকেই পার্লারে যাবেন ভেবেছিলেন ওই মহিলা। কী ভেবে গাড়ি ঘুরিয়ে নিলেন যদুবাবুর বাজারের দিকে।
সুদেহী স্বাস্থ্যবতী বালিহাঁসের প্রথম উড়ান বেশ রঙিন ও উজ্জ্বল!
ধন্যবাদ