PCOS-Polycystic ovarian syndrome(পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম) বর্তমান কালের ক্রমবর্ধমান সমস্যা। সহজ ভাষায় বিজ্ঞানের কচকচি ছাড়া সাধারণের বোঝার জন্য কয়েকটি কথা—

এটি একটি হর্মোনজনিত সমস্যা যাতে কয়েকটি উপসর্গ নিয়ে রোগীরা চিন্তিত হয়ে ডাক্তারবাবুদের সঙ্গে দেখা করেন। মহিলাদের মধ্যে পুরুষ হর্মোন অ্যানড্রোজেনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে কিছু সমস্যার সৃষ্টি হয়।

এক, অনিয়মিত ঋতুচক্র— সাধারণতঃ দেরি করে মাসিক হওয়া, হলে অতিরিক্ত রক্তস্রাব, অনিয়মিত ভাবে মাসিক হওয়া

দুই, অতিরিক্ত মোটা হয়ে যাওয়া

তিন- গায়ে অবাঞ্ছিত পুরুষালি লোম, হালকা গোঁফ, অনেক সময়ে ছাগল দাঁড়িও দেখা যায়। একে বলে Hirsutism. 

দীর্ঘদিন চিকিৎসা না করলে অতিরিক্ত মোটা হয়ে যাওয়ার ফলে টাইপ-টু ডায়াবেটিস বা অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া, মনোরোগ বা হৃদরোগ দেখা দিতে  পারে। সাধারণতঃ সন্তান ধারণের বয়সে (১৮ থেকে ৪৫ বছর) দুই থেকে কুড়ি শতাংশ মহিলারা এই রোগের শিকার। জিনঘটিত বা পরিবেশজনিত কারণেই এই সমস্যা হয়ে থাকে। 

পলিসিস্টিক কথাটির অর্থ হল, অনেকগুলি সিস্ট। PCOS-এর প্রধান বৈশিষ্টই হল, ডিম্বাশয় থেকে ডিম নির্গত না হওয়া। উল্টে ডিমের চারপাশে তরল জমে সিস্টে পরিণত হওয়া। ডিম্বাশয়ের গায়ে নেকলেসের মতো সিস্টগুলি দেখতে পাওয়া যায়।

আমরা ডাক্তারবাবুরা যা করে থাকি—

এক, রোগের সঠিক হিস্ট্রি নেওয়া, সঙ্গে অন্য কোনও উপসর্গ রয়েছে কি না দেখা

দুই, ক্লিনিক্যাল পরীক্ষানিরীক্ষা

তিন, শারীরিক কিছু পরীক্ষা করা। যেমন, হর্মোন পরীক্ষা (ডাক্তারবাবুরা যা যা বলবেন), আলট্রাসোনোগ্রাফি যা PCOS কে নিশ্চিত করে। সঙ্গে ব্লাড সুগার, লিপিড প্রোফাইলের পরীক্ষাও করে নেওয়া উচিত।

চিকিৎসা—

এক, মোটা হওয়ার ব্যাপারটা কমাতে হবে। এজন্য ডায়েট কন্ট্রোল করা জরুরি। সাধারণতঃ আপনার যা ওজন, তত গ্রামই প্রোটিন খাওয়া উচিত। শরীরের পক্ষে সেটাই যথেষ্ট। বেশি প্রোটিন আপনার ওজন বাড়াবে। 

বেশি তেলের রান্না, ঘি-মাখন, লুচি-পরোটা যতটা সম্ভব বর্জন করতে হবে। এক কথায়, প্রতি মাসে মাথাপিছু পাঁচশো মিলিলিটার তেল।

ফাস্ট ফুড, কোল্ড ড্রিঙ্ক, মিষ্টি, আইসক্রীম বর্জন করতে হবে।

রোজ হাঁটতে হবে। সঙ্গে হাল্কা ব্যায়াম বা যোগাভ্যাস করতে হবে।

দুই- গায়ে লোমের আধিক্য হলে স্কিন স্পেশালিস্টের সঙ্গে যযোগা যোগ করুন

তিন, PCOS-এর জন্য এখন বহু রকমের চিকিৎসা রয়েছে। আপনার ডাক্তারবাবুর সঙ্গে দেখা করে তাঁর মতামত অনুসারে চিকিৎসা চালাতে হবে। মনে রাখতে হবে, এই চিকিৎসা কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী হবে।