হ্যাঁ এবার মহাকাশে শুরু হবে খনি দখলের লড়াই

চাঁদ তুমি কার ?

এতটাই আধুনিক হয়েছে মানবসভ্যতা যে চাইলে চাঁদে একফালি জমি কিনে ফেলা যায়। প্রেমিকার নামের সাথে নাম মিলিয়ে দূরের কোনো তারার নাম রাখা যায়। পকেটে রেস্ত থাকলে টুক করে ঘুরে আসা যায় মঙ্গল থেকে। অতএব বিজ্ঞানের কাঁধে ভর করে ‘করলো দুনিয়া মুঠ্ঠি মে’। তবে কি শুধুই বিজ্ঞানের জয়ধ্বজা ওড়াবার বাসনা। এর পেছনে রয়েছে অর্থনীতির এক অমোঘ সম্ভাবনাও।

সবার লক্ষ্য মহাকাশের খনির দিকে

পৃথিবীর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে খনিজ সম্পদের চাহিদা। কম্পিউটার, মোবাইল, ব্যাটারি, মাইক্রো চিপ আধুনিক দুনিয়া অচল প্রায় এসব ছাড়া। আর এগুলো তৈরি করতে কাঁচামাল হিসেবে একটা না একটা খনিজ পদার্থ লাগেই।এদিকে প্রাকৃতিক সম্পদের ভাণ্ডার তো অফুরান নয়। তা হলে উপায়? এই উপায় খুঁজতে গিয়েই দিনে দিনে জোরালো হচ্ছে স্পেস মাইনিং এর দাবি। বিশ্বের দুই অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তি আমেরিকা আর চিনের মধ্যে এ নিয়ে রীতিমতো ঠাণ্ডা লড়াইয়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। স্পেস মাইনিংকে ঘিরে মাল্টি ট্রিলিয়ন ডলার ইন্ডাস্ট্রির সম্ভাবনাটা যথেষ্ট লোভনীয় যেকোনো দেশের পক্ষেই। ইলন মাস্ক, জেফ বেজসের  মতো ধনকুবেররাও কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে চাহিদা মাফিক বাজার ধরতে। ভূ-রাজনীতির ক্ষেত্রে মহাকাশ গবেষণার বরাবরই একটা আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। আমেরিকা-সোভিয়েত ইউনিয়নের মতো জুজুধান দুপক্ষও এই একটা ব্যাপারে অন্তত ভারসাম্যের নীতি মেনেই চলত। কিন্তু নয়া-উদারনীতিবাদের মুনাফা সর্বস্ব দুনিয়ায় মহাকাশ জুড়েও চলছে আধিপত্য বিস্তারের  খেলা।

কর্মব্যস্ততা শুরু হবে মহাকাশ জুড়ে

স্পেস মাইনিং এর জন্য যে ধরনের প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন আর দক্ষতা প্রয়োজন তা নিয়ে চলছে নিরন্তর গবেষণা। আপাতত যত আগ্রহ চাঁদ আর মঙ্গলকে ঘিরেই। ব্রিটিশ কোম্পানি ‘মেটালিসিস’ রিগোলিথ বা চাঁদের মাটি থেকে অক্সিজেন নিষ্কাশনের চেষ্টায় রত। আবার ‘অস্ট্রেলিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ’ কীভাবে গ্রহ-উপগ্রহ থেকে খনিজ সম্পদ উত্তোলনের ঝুঁকি কমানো যায় সেটা নিয়ে গবেষণা করছে। আমেরিকান কোম্পানি ‘অফওয়ার্ল্ড’ তৈরি করতে চাইছে এমন ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবট যা অন্তরীক্ষেও সমানভাবে কাজে লাগানো যাবে। আরেকটি কোম্পানি ‘আস্টরয়েড মাইনিং কর্পোরেশন’  এর লক্ষ্য আবার স্পেস রিসোর্সের বাজার তৈরি করা। অন্যদিকে চিনের প্রেসিডেন্ট জিনপিং এর ইচ্ছে ‘স্পেস ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তোলার পাশাপাশি চিনকে স্পেসের ক্ষেত্রেও সুপার পাওয়ারে পরিণত করা। তাই মহাকাশে খনিজ সম্পদের ভাণ্ডার দখলে আনার ক্ষেত্রে চিনের তৎপরতাও চোখে পড়ার মতো। মোটের ওপর খনি দখলের লড়াই আর শুধু পৃথিবীর বুকেই সীমাবদ্ধ নেই,এর উত্তাপ পৌঁছেছে মহাকাশ অবধি।

মহাকাশে শুরু হয়েছে সিনেমার শুটিং