চাঁদের মাটিতে পা রাখল মানুষ। কলকাতার একটি সংবাদপত্র যুগান্তকারী সেই খবরের হেডিং করেছিল, ‘চন্দ্র পদতলে’। দুনিয়া জুড়ে সেই আলোড়নের প্রকাশ ঘটেছিল বিশ্বের প্রতিটি সংবাদপত্রেই।

সত্যিই তো! এতদিন বহুদূর থেকে দেখা কল্পনার রহস্যময় বস্তুটির উপরে পৌঁছল মানুষ। ১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই। নীল আর্মস্ট্রং আর বাজ অলড্রিন প্রথমবার নামলেন চাঁদের মাটিতে। মাইকেল কলিন্স থাকলেন রকেটের ভিতরে। সেখানে  ২১ ঘণ্টা ৩৬ মিনিট কটিয়ে ফের রওনা দিলেন পৃথিবীর দিকে। একসময় পৃথিবীতে ফিরে এল তাঁদের মহাকাশযান অ্যাপোলো ১১।

কিন্তু তারপর কী হল? 

সেটা একটা মজার গল্প। বিশ্ব যখন মানবজাতির অসাধারণ সাফল্যে মুগ্ধ, সেই সময়ে নীল আর্মস্ট্রং আর অন্য দুই মহাকাশচারী নাকি অ্যাপোলো ১১ থেকে নেমে কোনওদিকে না তাকিয়ে ছুটে  গিয়েছিলেন কাস্টমস অফিসে। বাইরে থেকে এলে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স তো লাগবেই! কী কী সঙ্গে নিয়ে এসেছ, দেখাও। মহাকাশচারীরা নাকি সেই সব তথ্য জমাও করেছিলেন। ওই যেমন চাঁদের শিলা, চাঁদের ধুলো আর চাঁদের কিছু জিনিসের নমুনা আর কি!  

এমনই একটি খবর গোটা দুনিয়ায় আলোডন ফেলেছিল। সেই সময়ে খবর ছড়িয়ে পড়েছিল, অ্যাপোলো ১১ -এর মহাকাশচারী— অলড্রিন, আর্মস্ট্রং ও কলিন্সকে ২৪ জুলাই ১৯৬৯-এ পৃথিবীতে অবতরণ করার পর একটি কাস্টমস ফর্ম পূরণ করতে হয়েছিল। চাঁদ থেকে নিয়ে আসা সামগ্রীর হিসেব চুকিয়ে দেওয়ার পরেই নিস্কৃতি পেয়েছিলেন তাঁরা। বিশ্বাস হচ্ছে না? তবে দেখুন, খবরের সঙ্গে থাকা ছবিটি সে কথাই জানাচ্ছে।  মহাকাশচারীদের নামের সইও রয়েছে এতে। 

কিন্তু সত্যি কি এমন ঘটেছিল? 
SPACE.com  ওই রকম একটি ডকুমেন্ট পেয়ে পৌঁছে গিয়েছিল নাসার দফতরে। যাচাই করতে চেয়েছিল খবরের সত্যতা। নাসার মুখপাত্র জন ইয়েমব্রিক ডকুমেন্টটি দেখে  SPACE.com কে বলেন, এটা  নিশ্চয়ই কেউ রসিকতা করেছে। কারণ, অ্যাপোলো ১১ হাওয়াই থেকে ১৪৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং ইউএস হর্নেট থেকে ২১ কিলোমিটার দূরে অবতরণ করেছিল। সেখান থেকে  মহাকাশচারীদের নিয়ে আসার  জন্য নৌবাহিনীর একটি জাহাজ পাঠানো হয়েছিল। মহাকাশচারীদের উদ্ধার করে  হাওয়াই পৌঁছতে জাহাজটির আরও দু’দিন লেগেছিল। অর্থাৎ, ২৬ জুলাই হাওয়াইয়ে পৌঁছেছিলেন আর্মস্টংরা। আর ডকুমেন্টে তারিখ তো রয়েছে ২৪ জুলাই! 

তবে আজকের দিনে কিন্তু নাসার মহাকাশচারীদের কাস্টমসের ক্লিয়ারেন্স নিতে হয়। তবে তা  শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের দিকে যাওয়ার সময়েই নেওয়া হয়। কারণ, এখন তাঁদের বিভিন্ন সিস্টেম, মডিউল এবং যন্ত্রপাতির সঙ্গে অভ্যস্ত হওয়ার জন্য জাপান, কানাডা, ইউরোপ এবং রাশিয়ায় প্রশিক্ষণ নিতে হয়। তাই কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের  দরকার হয়ে পড়ে।