বউ-বাচ্চা নিয়ে খেতে গিয়েছেন রেস্তরাঁয়। ওয়েটারকে ডেকে অর্ডার করলেন— শাহি মাটন বিরিয়ানি, মিক্সড স্যালাড আর চিকেন চাপ। তিন প্লেট। ওয়েটার হাসিমুখে অর্ডার নিয়ে চলে গেল ভিতরে। আপনারা অপেক্ষায়। একটু পরে ডিশ সার্ভ হল। ধবধবে সাদা বাসমতী চালের ভাত আর ইলিশ মাছের মাথা দিয়ে শুক্তো। কেমন হতে পারে ব্যাপারটা! হয় নাকি এমন?

জাপানের টোকিও শহরের তোয়োসুতে ‘দ্য রেস্টোরেন্ট অব অর্ডার মিসটেকস’-এ এমনটা কিন্তু হামেশাই হয়। এই রেস্তরাঁর পরিচালন পদ্ধতি একটু অন্যরকম। এখানে যে ওয়েটাররা আপনার অর্ডার নেবেন বা খাবার সার্ভ করবেন— তাঁরা সবাই ডিমেনশিয়ায় (স্মৃতিভ্রংশ) আক্রান্ত। তাই আপনি অর্ডার দিয়েও নিশ্চিত হতে পারবেন না আপনাকে শেষ পর্যন্ত ঠিক কী খেতে দেওয়া হবে। সবচেয়ে বড় কথা, রেস্তরাঁর মালিক কিন্তু জেনেবুঝেই এমনটা করেছেন। 

দ্য রেস্টোরেন্ট অব অর্ডার মিসটেকস

জনপ্রিয় ফুড ব্লগার মিজুহো কুডো এই রেস্তোরাঁয় গিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘এটা একটা অদ্ভুত, সুন্দর অভিজ্ঞতা।’’  তিনি সেখানে একটি হ্যামবার্গার অর্ডার করেছিলেন। পরিবর্তে পেয়েছিলেন জনপ্রিয় জাপানি ডিশ, গিওজা ডাম্পলিং (শুয়োরের মাংস, মাশরুম ও বাঁধাকপির মিশ্রণে তৈরি একটি খাবার)।  কুডো জানিয়েছেন, যে খাবার তাঁকে সার্ভ করা হয়েছিল, তা ছিল অত্যন্ত সুস্বাদু। ওয়েটার হাসিমুখে ভুল খাবারটি নিয়ে এসেছিলেন।

যদি জানা না থাকে যে আপনার অর্ডারের ডিশটি বদলে যেতে পারে , তাহলে হয়তো বিষয়টি বিরক্তিকর লাগতে পারে।  কিন্তু যদি জেনে যান, এই কাজের পিছনে কোনও মহৎ উদ্দেশ্য রয়েছে, তবে কিন্তু এমন  সারপ্রাইজ আপনার ভাল লাগবে।

 ‘দ্য রেস্টোরেন্ট অব অর্ডার মিসটেকস’-এ,  ডিমেনশিয়া রয়েছে— এমন কর্মীদেরই নেওয়া হয়েছে। ফলে তাঁরা আপনার অর্ডার শোনার পর ভুলে যেতেই পারেন। কিন্তু আপনি যদি আগে থেকেই জেনে যান যে এখানকার ওয়েটাররা স্মৃতিভ্রংশ রোগে ভুগছেন, তাহলে গোটা ব্যাপারটা আপনার ভাল লাগতে পারে। মনে হতে পারে, সুস্থ লোকেদের একটু সহযোগিতা পেলে এই মানুষগুলি সমাজের স্রোতে ফিরে আসতে পারে।