সাবধান, এনআরআই জামাই একদিন ধোঁকা দিতে পারে আপনার মেয়েকে!

প্রথমেই বলি, সবার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা এমন না-ও হতে পারে। তবে এ নিয়ে ভারত সরকারের হিসাব আমাদের চমকে দিচ্ছে।

অনেক বাবা মায়েরই স্বপ্ন, তাঁদের মেয়ের বিয়ে যেন বিত্তশালী পরিবারে হয়। মেয়েকে আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য দিতে তাঁরা খুঁজতে থাকেন মনের মতো পাত্র। আর জামাই যদি এনআরআই হয় তো কথাই নেই। বাবা মায়েরা ভাবেন, মেয়ে দেশ-বিদেশ ঘুরতে পারবে। কত ভাল থাকবে ! কিন্তু  সব সময়ে সুখস্বপ্নের সেই ছবিটা মেলে না।  অন্তত তেমনই পরিসংখ্যান হাজির করেছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক।

কেরলের সমাজকর্মী গোবিন্দন নাম্পুথিরির আরটিআই-এর জবাবে বিদেশ মন্ত্রক যে তথ্য দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, গত সাত বছরে সরকারের কাছে  মোট ২১৫৬টি অভিযোগ জমা পড়েছে। যেখানে ভারতীয় মহিলারা জানিয়েছেন, এনআরআই স্বামী ভারত থেকে বিয়ে করে নিয়ে গিয়ে হয় তাঁকে ছেড়ে দিয়েছে। কিংবা স্বামী কোথাও হারিয়ে গিয়েছেন। 

এই তালিকার একেবারে উপরে দুনিয়ার বিত্তশালী দেশ আমেরিকায় বসবাসকারী  এনআরআই জামাইয়েরা। ২১৫৬টি অভিযোগের মধ্যে আমেরিকা থেকেই এসেছে এই ধরনের ৬১৫টি খবর।  এরপর সংযুক্ত আরব আমিরশাহী। সেখান থেকে এসেছে ৫৮৬টি অভিযোগ।  বিয়ে করে সিঙ্গাপুরে গিয়ে ২৩৭ জন ভারতীয় মহিলা এনআরআই (NRI Act) স্বামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন। সৌদি আরব থেকে ১১৯টি, কুয়েত থেকে ১১১টি, ব্রিটেন থেকে ১০৪টি, অস্ট্রেলিয়া থেকে ১০২টি ও কানাডা থেকে ৯২ জন মহিলার অভিযোগ পেয়েছে ভারত সরকার। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, ৪৭টি দেশ থেকে এই ধরনের বৈবাহিক বিরোধের অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।

অনেকেই মনে করেন, এনআরআই পাত্র নির্বাচনের সময় ভারতীয় পরিবারগুলির মানসিকতা একটি মেয়েকে বিদেশ বিভুঁইয়ে অসহায় অবস্থায় ফেলে দেয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পরিবারগুলি ভুলে যায় পাত্র নির্বাচনের প্রাথমিক শর্তগুলি। এমনকি, এ ব্যাপারে সাধারণ সতর্কতাও নেন না তাঁরা। অনেক সময়ে পাত্রী নিজেও এনআরআই পাত্রকে বিয়ে করতে বিশেষ ভাবে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। ভুলে যান তার সাথে প্রতারণা (Cheating) হতে পারে। এই সব ভুল একটি মেয়েকে বিচ্ছিন্ন করা দেয়  বাড়ি থেকে অনেক দূরে, ভিন্ দেশের কোনও একটি ঠিকানায়। সেখানে সে মুখোমুখি হয় ভাষা কিংবা যোগাযোগের সীমাবদ্ধতায় ,  অনেককে আবার অর্থকষ্টের মধ্যেও দিন কাটাতে হয়। অনেককে আবার পারিবারিক হিংসার শিকার হতে হয়। আবার আইনি জটিলতাও রয়েছে। বিভিন্ন দেশে বিবাহ বিচ্ছেদের আইন আলাদা। তাই এই ধরনের পরিস্থিতিতে একজন মহিলার পক্ষে ন্যায়বিচার মেলা কঠিন হয়ে পড়ে।  তাই অনেকে মনে করছেন, এনআরআই বিবাহ বিরোধের পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশ্বজনীন আইনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।