কাতার ২০২২ ফুটবল বিশ্বকাপের প্রতিবাদে বিশ্বের অনেক ফুটবলার।

কিছুদিন আগে পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে কাতারের আচরণের বিরুদ্ধে এরিক কন্টোনা প্রতিবাদ করেছিলেন। এবার তার সাথে যোগ দিলেন আরও কয়েকটি দেশের ফুটবলাররা। 

নরওয়ে, জার্মানি এবং নেদারল্যান্ডসের বিশ্বকাপ দলের অনেক ফুটবলার কাতার বয়কটের ডাক দিয়েছেন।

‘দ্য গার্ডিয়ান’ পত্রিকায় রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১০ সালে কাতার বিশ্বকাপের আয়োজনের দায়িত্ব পাবার পর থেকে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার প্রায় ৬৭০০ জন অভিবাসী কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ, কাতারে শ্রম আইন লঙ্ঘিত হচ্ছে ও পরিযায়ী শ্রমিকদের উপরে অত্যাচার করা হচ্ছে। কারণ, কাতারে গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা প্রায়ই যখন চল্লিশ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়, তখনও এই শ্রমিকদের কাজ করতে বাধ্য করা হয়। বেশিরভাগ শ্রমিকই মারা গিয়েছেন ডিহাইড্রেশনএর ফলে। এই অভিযোগকে সামনে রেখেই ফ্রান্সের কিংবদন্তি ফুটবলার এরিক কন্টোনা কাতার বিশ্বকাপ বয়কটের ডাক দিয়েছেন। 

যদিও এ নিয়ে কাতারের প্রতিক্রিয়া হল, তাদের দেশে প্রায় ২০ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছেন। এত সংখ্যক লোকের মধ্যে মৃত্যুর এই সংখ্যা একটি স্বাভাবিক ঘটনা। 

কাতার সরকার দাবি করেছে, তারা কাজের পরিস্থিতি এবং শ্রম অধিকারের বিষয়ে কয়েক বছর ধরে বেশ কিছু সংস্কার করেছে।

নীচের ছবিগুলি খেলার মাঠে বিভিন্ন দেশের ফুটবলারদের প্রতিবাদের নমুনা

জার্মান খেলোয়াড়েরা বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের কিক-অফের আগে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তাঁদের কালো জার্সিতে সাদা অক্ষরে ‘মানবাধিকার (Human Rights )’ কথাটি লেখা রয়েছে। যদি জার্মান ফুটবল দল জানিয়েছে, তারা বিশ্বকাপ বয়কটের বিরোধী।
এটি নরওয়ে দলের জার্সি যেখানে ‘মানবাধিকার খেলার মাঠে ও বাইরে’ কথাটি লেখা রয়েছে। 
বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের খেলায় নেদারল্যান্ডসের জাতীয় দলের প্রতিবাদ।

এই বিক্ষোভ নিয়ে ফিফার অবস্থান কি? ফিফার শৃঙ্খলাবিধিতে বলা হয়েছে, কোনও খেলোয়াড় কিংবা ফেডারেশন সংবেদনশীল বিষয়কে খেলার মাঠে নিয়ে এলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে পারেন। তবে ফিফার মুখপাত্র বলছেন, তাঁরা জার্মানি কিংবা নরওয়ের খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবেন না।  তাঁর কথায়, ‘‘ফিফা বাক্ স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। কোনও কাজ ভালর জন্য হলে ফিফা  সেই কাজের পাশে থাকে।’’ একটি সাক্ষৎকারে ফিফার প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো বলেছেন,‘‘বিশ্বকাপের আয়োজক কাতার দেশের সামাজিক অবস্থার অনেক উন্নতি করেছে।

কাতারে কাজ করছেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা।  মোট ২০ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকের প্রায় ৩০,০০০ জন বিশ্বকাপ-সম্পর্কিত প্রকল্পে কাজ করছে।

বিশিষ্ট খেলোয়াড়দের বক্তব্য 

ইংল্যান্ডের ম্যানেজার গ্যারেথ সাউথগেট জানিয়েছেন, ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আলোচনায় বসেছে।

জার্মানির মিডফিল্ডার জোশুয়া কিমিচ বলেছেন, কাতার বিশ্বকাপ বয়কটের ডাক অনেক দেরিতে দেওয়া হয়েছে। তবে এই বিষয়ে সচেতনা বাড়াতে আমাদের প্রচার করতে হবে। ফুটবল সে ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। 

বেলজিয়াম কোচ রবার্তো মার্টিনেজ বলেছেন, খেলোয়াড়দের বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বকাপ বয়কট করা দলগুলির জন্য ভুল হবে।