তুলতুলে রসগোল্লা

বালিহাঁসের পাকশালে অসাধারণ নরম তুলতুলে  রসগোল্লা নিয়ে আমি ধানসিড়ি আপনাদের সামনে। সবার সুবিধার জন্য পুরো রেসিপিটা পরপর তুলে ধরলাম, এতে কাজটা অনেক সহজ হবে। ঝটপট আমার এই লেখাটা অনুকরণ করলেই আপনারাও তৈরি করে ফেলতে পারবেন এমন সুন্দর তুলতুলে রসগোল্লা।

ছবি দেখেই খেতে ইচ্ছে  করছে? তবে শুধু খেতে জানলেই কি হবে? অন্যদেরও তো খাওয়াতে হবে, শেখাতে হবে।

আমার এখন নিত্যনতুন রান্না করার ভীষণ শখ জেগেছে। তাছাড়া, ছুটির দিনে নানা রকম রান্না করতে একটু ইচ্ছে করে বৈকি। সন্ধের সময় তাই নরম নরম রসগোল্লা বানিয়ে ফেললাম।

চলুন, শুরু করা যাক।

উপকরণ—

দুধ ১ লিটার

লেবুর রস বা ভিনিগার ১-২ টেবিল চামচ

চিনি ১ কাপ

সাদা এলাচ বেশ কিছু 

জল ৪ কাপ

প্রণালী—

( ১ ) প্রথমে একটি পাত্রে দুধ নিয়ে ফুটিয়ে নিতে হবে । দুধ প্রথমবার ফুটে উঠলে দুধের মধ্যে অল্প করে লেবুর রস বা ভিনিগার দিতে হবে আর নাড়তে হবে অবিরাম । কিছুক্ষণ পরে যখন হালকা সবুজ জল বের হয়ে ছানা আর জল আলাদা হয়ে যাবে, তখন লেবুর রস দেওয়া  বন্ধ করতে হবে । তবে কারও যদি ছানা করতে অসুবিধে থাকে, সেক্ষেত্রে দোকান থেকে কিনে আনতে পারেন।

( ২ ) এরপর পরিস্কার পাতলা কাপড়ের সাহায্যে ছানা থেকে গরম জল ছেকে ফেলে সাধারণ জল দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। ছানাতে যেন লেবুর রস বা ভিনিগারের গন্ধ না থাকে। এবার কাপড়ের টুকরোকে  হাত দিয়ে চেপে জল যতটুকু বের করা যায় করতে হবে। ছানার বাকি জল ঝরার জন্য কয়েক ভাঁজ করে রাখা শুকনা সুতি কাপড়ের উপর ছড়িয়ে দিয়ে হাত দিয়ে আলতো ভাবে ডলে নিতে হবে ।

( ৩ ) এভাবে ৫ মিনিট করলে ছানার জল শুকনো কাপড় শুষে নেবে । জোরে ডলে বেশি শুকিয়ে ফেলবেন না, ছানা নরম থাকবে যেন বল বানানো যায়। তারপর ছানা রসগোল্লা তৈরির জন্য রেডি।

রসগোল্লার জন্য শিরা তৈরী করতে হবে—

গ্যাসে একটি পাত্রে চার কাপ জল , দু কাপ চিনি ও বেশ  ক’টা সাদা এলাচ দিয়ে জ্বাল দিতে হবে। চিনি আর জল ভাল ভাবে মিশে গেলেই  আঁচ কমিয়ে রেখে দিতে হবে ।

নরম তুলতুলে রসগোল্লা তৈরির জন্য—

( ১ )  তুলতুলে  রসগোল্লা তৈরিতে ছানার সাথে কিছুই মেশানোর প্রয়োজন নেই , শুধু ছানা ১০ মিনিট ধরে ভাল ভাবে হাত দিয়ে ডলে  নিলেই হবে । ছানার মধ্যে যেন দলা দলা না থাকে এবং বল বানালে খুব মসৃন হয় । ( ইচ্ছে করলে ছানার সঙ্গে সামান্য ময়দা দিতে পারেন )

( ২ ) এরপর  ছানা দিয়ে একটু বড় করে বল বানাতে হবে, কারণ এই মিষ্টি নরমাল রসগোল্লার চেয়ে সাইজে একটু বড় হয় । বল মসৃন না হয়ে ফেটে গেলে আবার ভাল করে ডলে নিয়ে বানাতে হবে।

( ৩ ) সবগুলি বল বানানো হয়ে গেলে শিরার আঁচ মাঝারি করে দিতে হবে । শিরা ফুটতে শুরু করলে বলগুলো একসাথে তাতে ছেড়ে দিতে হবে এবং ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ৫ মিনিট ফোটাতে হবে । এ অবস্থায় মিষ্টি নাড়াচড়া করা যাবে না , ৫ মিনিট পর আঁচ অল্প করে আরও ১০ মিনিট জ্বাল দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে শিরা যেন বেশি ঘন না হয় ।

( ৪ ) এরপর রসগোল্লা হয়ে গিয়েছে কিনা তা পরীক্ষার জন্য একটা বাটিতে জল নিয়ে  একটা রসগোল্লা ছেড়ে দিতে হবে। যদি ডুবে যায় তবে বুঝবেন হয়ে গিয়েছে। না ডুবলে আরও ৫ মিনিট অল্প আঁচে শিরায় জ্বাল দিতে হবে ।

স্পেশাল টিপস

এই মিষ্টি বানাতে ছানায় জল থাকলে চলবে না। জল থাকলে মিষ্টি ফেটে যাবে, ভেঙে যাবে । আবার ছানা বেশি শুকিয়ে ফেলাও যাবে না। কারণ, তাতে ছানা শক্ত হয়ে যাবে, মসৃন মিষ্টি বানানো যাবে না । আর শিরায় বেশি সময় জ্বালালে মিষ্টি শক্ত হয়ে যাবে । মনে রাখবেন, রসগোল্লা আর এই তুলতুলে নরম রসগোল্লা এক নয়। উপকরণ, প্রস্তুত প্রণালী ও স্বাদ— সব কিছুতেই সামান্য পার্থক্য রয়েছে ।

পরিবেশন—-

নরম তুলতুলে এই রসগোল্লা বানানো হয়ে গেলে নামিয়ে ঠান্ডা করে পরিবেশন করুন, এই  মিষ্টি হালকা গরম খেতেও অসাধারণ লাগে। 

তাই আর দেরি কেন? খুব তাড়াতাড়ি বানিয়ে ফেলুন। কেমন লাগল, জানাতে ভুলবেন না যেন।