এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায় কেঁপে উঠলো বাংলাদেশ। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে একটি কন্টেইনার ডিপোতে বিশাল অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ৪৯ জন নিহত এবং ৪৫০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। বন্দরনগরী চট্টগ্রাম থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে সীতাকুণ্ডে শনিবার রাতে এই আগুনের সূত্রপাত হয়। আর এর জেরে একাধিক বিস্ফোরণ ঘটে। এই বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে ৪ কিলোমিটার রেডিয়াস জুড়ে। আশপাশের এলাকার বাড়িঘরের সমস্ত কাঁচের জানালা ভেঙে গেছে ,নষ্ট হয়ে গেছে বাড়ির টিভি ,ফ্রিজ ও নানান বৈদ্যুতিক সামগ্রী।
চট্টগ্রাম নগরী থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে কদমরসুল এলাকায় বিএম ডিপো নামের ওই কন্টেইনার টার্মিনালে শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আগুন লাগে। পরে রাসায়নিকের কন্টেইনারে একের পর এক বিকট বিস্ফোরণ ঘটতে থাকলে বহু দূর পর্যন্ত কেঁপে ওঠে। চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সবগুলো ইউনিট চেষ্টা করেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারায় রাতে সাড়ে ৩টার দিকে ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লা থেকে অগ্নি নির্বাপক গাড়ি পাঠাতে অনুরোধ করা হয়। চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আনিছুর রহমান রোববার সকালে জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও বারবার বিস্ফোরণে আগুন ছড়িয়ে পড়ছে। ডিপোতে রাসায়নিক থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছে। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে আগুন নেভাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনী। ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলের কাছে যেতে না পারায় ওপর থেকে জল ছিটানোর কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনী।
রাসায়নিক পদার্থ যাতে সমুদ্রে গিয়ে না পড়ে, সে জন্যও কাজ করছে সেনাবাহিনী। গতকাল শনিবার রাতে আগুন লাগার পর কন্টেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। আজ রোববার দুপুরে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে ৪১ হয়েছে। দুপুরেও ডিপো থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে। কিছু কিছু জায়গায় আগুন জ্বলছে। ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে পুরো এলাকা।
তবে এক্ষেত্রে এলাকার তরুণ সমাজের ভূমিকা প্ৰশংসনীয়। তারা নিজেরা সেনাবাহিনী ও ফায়ারবিগ্রেডের সাথে উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছে। রক্তদানের কাজ করছে। আহতদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে পার্শ্ববর্তী হাসপাতালগুলিতে। সেখানে সমস্ত ডাক্তাররা ছুটি বাতিল করে নিজ নিজ হাসপাতলে ফিরে এসেছেন। দরকার পড়ছে প্রচুর রক্তের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন।